জিলহজ মাসের নবম দিন হাজিদের জন্য আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন। আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়া হজের প্রধান কাজ। এ দিনটিতে পৃথিবীর সব মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা মুস্তাহাব। এ দিন রোজার ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
صِيَامُ يَوْمِ عَرفَةَ اَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ اَنْ يُّكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِىْ قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِىْ بَعْدَه
আরাফার দিন কেউ রোজা রাখলে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম: ২৬১৭)
আরও বর্ণিত রয়েছে এ দিন আল্লাহ তাআলা তার অসংখ্য বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে দেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন,
مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ فَيَقُولُ: مَا أَرَادَ هَؤُلَاءِ
আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন, কী চায় তারা? (অর্থাৎ তারা যা চায়, তাই তাদের দেওয়া হবে) (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৮) আরাফার রোজা কবে রাখতে হয়?
চাঁদ দেখার ভিন্নতা অনুসারে যে দেশে যেদিন জিলহজ মাসের ৯ তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী দিন, ওই দিনটিই ফজিলতপূর্ণ আরাফার দিন গণ্য হয়। ওই দিন রোজা রাখলে উপরোক্ত সওয়াব ও ফজিলত লাভের আশা করা যায়।এ বছর (১৪৪৫ হিজরি, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ) সৌদি আরবে অবস্থানকারীদের জন্য আরাফার দিন হলো আগামী ১৫ জুন, শনিবার। বাংলাদেশে ১৬ জুন, রোববার। যারা আরাফার দিনের রোজা রাখতে চান, তারা শনিবার শেষ রাতে সাহরি করে রোববার রোজা পালন করবেন।
আরাফার রোজা কয়টি?
আরাফার রোজা একটি। শুধু ৯ই জিলহজের রোজাই আরাফার রোজা। তবে জিলহজের প্রথম দশকের প্রতিটি দিনই ফজিলতপূর্ণ এবং কেউ চাইলে আগে ৭ বা ৮ জিলহজও রোজা রাখতে পারেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, জিলহজের প্রথম নয় দিনের প্রতি দিনের রোজা এক বছরের রোজার এবং এর প্রত্যেক রাতের নামাজ কদরের রাতের নামাজের সমতুল্য। (সুনানে তিরমিজি: ৭৫৮)
উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) প্রতি বছরই জিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখতেন। তিনি বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো, আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ। (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬)