যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

আঙুল গুণে তাসবিহ পড়া যাবে কি?

আল্লাহর তাসবিহ বা প্রশংসামূলক বাক্য পড়ার ফজিলত অনেক বেশি। কিন্তু এসব তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার) পড়ার সময় আঙুল বা আঙুলের কর গুনে গুনে পড়ার কি বিশেষ কোনো ফজিলত আছে? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?

হ্যাঁ, হাতের আঙুল বা কর দ্বারা গুনে গুনে তাসবিহ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাতের আঙুলে তাসবিহ গণনা করে পড়া হলে; তা আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তির জন্য সাক্ষী হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও হাতের আঙুল গুনে গুনে তাসবিহ পড়ছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
১. হজরত ইউসায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাকদিস (সুব্বুহুন ক্বুদ্দূসুন) এবং তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এগুলো খুব ভালভাবে স্মরণে রাখবে এবং এগুলোকে আঙ্গুলে গুনে রাখবে। কেননা আঙ্গুলগুলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং এগুলোও সেদিন (কেয়ামতের দিন) কথা বলবে। (আবু দাউদ, তিরমিজি)

২. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখলাম তিনি নিজের হাতে (ডান হাতে) তাসবিহের গিঠ দিচ্ছেন (গণনা করছেন)। (তিরমিজি, আবু দাউদ, মুসতাদরাকে হাকেম)

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতে গণনা করে তাসবিহ পড়তে উৎসাহ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
৩. হজরত ইউসাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বলেছেন, তোমরা নারীরা অবশ্যই তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকদিস (সুব্বুহুন ক্বুদ্দূসুন) করবে এবং আঙ্গুলের গিটে গণনা করবে; কারণ এদেরকে কেয়ামতের দিন প্রশ্ন করা হবে এবং কথা বলানো হবে। (এরা জিকিরের সাক্ষ্য প্রদান করবে।) (তিরমিজি, ইবনে হিব্বান, মুসতাদরাকে হাকেম)

হাতের আঙুল বা আঙুলের কর গণনা ছাড়াও কংকর দিয়ে তাসবিহ গণনার একাধিক প্রমাণ আছে হাদিসে। আবার কেউ কেউ সুতায় দেওয়া গিট গণনা করেও তাসবিহ পড়তেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু এ রকম সুতায় এক হাজার গিট তাসবিহ না পড়ে ঘুমাতেন না। এ ছাড়াও তিনি কংকর গুনে গুনেও জিকির করতেন।

হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু খেজুরের আঁটি গুনে গুনে তাসবিহ পড়তেন। তিনি তাসবিহ পড়ার জন্য খেজুরের আঁটি জমিয়ে রাখতেন। ফজরের নামাজের পর সে আঁটি দিয়ে তিনি তাসবিহ পড়তেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমান জিকির আজকার করার সময় নিজ নিজ আঙুল বা আঙুলের কর গণনা করে তাসবিহ পড়লে হাদিসে উল্লেখিত ফজিলত পেয়ে ধন্য হবেন। ফলে বিচার দিবসে এসব আঙুল কিংবা আঙুলের কর তাদের জিকিরের স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।