যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

ফিতরার পণ্যের পরিমাণ ও ফজিলত

সাদকাতুল ফিতর। গরিব অসহায় মানুষের আনন্দের অনুসঙ্গ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ঘোষিত এবারের নির্ধারিত ফিতরার পরিমাণ- সর্বোচ্চ ২৩১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত আবশ্যক কাজ এটি। সাদকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো- এক সা খাদ্যদ্রব্য, এক সা খেজুর, এক সা যব বা এক সা কিসমিস।

হাদিসে খাদ্যদ্রব্য বলতে অনেকে গম বুঝিয়েছেন। ইসলামিক স্কলারদের মতে, অঞ্চলভেদে গম, ভুট্টা, পার্ল মিলেট কিংবা স্থানীয় খাদ্যদ্রব্য উদ্দেশ্য।

ফিতরা কী?

ফিতরা (فطرة) আরবি শব্দ; যা ইসলামে জাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদকাতুল ফিতর (ফিতরের সদকা) নামে পরিচিত। ফিতর বা ফাতুর বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয়। যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভাঙেন। গরিবের প্রতি ধনীর সহানুভূতি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব-দুঃস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা দানকে।

তবে স্থানীয় খাদ্যদ্রব্য হিসেবে বিবেচিত কিংবা ব্যবহৃত নয় এমন কিছু দিয়ে সহানুভূতি প্রকাশ করে ফিতরা দেওয়া কোনো মুসলিমের উপর আবশ্যক নয়। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, অঞ্চলভেদে যেখানে যে জিনিসের ব্যবহার বেশি সেখানে তা (যব, খেজুর, কিসমিস, পনির) দিয়ে ১ সা পরিমাণে (পণ্য বা অর্থ দিয়ে) ফিতরা আদায় করা। তা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে দোষের কোনো কিছুই নেই।

ফিতরা দেওয়ার সময়

ফিতরার খাদ্য ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই বণ্টন করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজের পর পর্যন্ত দেরি করা বৈধ নয়। বরং ঈদের এক বা দুই দিন আগে আদায় করে দেওয়াই উত্তম।

ইসলামিক স্কলারদের বিশুদ্ধ মতানুযায়ী ফিতরা আদায় করার সময় শুরু হয় ২৮ শে রমজান। কারণ রমজান মাস ২৯ দিনও হতে পারে। আবার ৩০ দিনও হতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাগণ ঈদের একদিন বা দুই দিন আগে ফিতরা আদায় করতেন।

ফিতরা পাবেন যারা

ফিতরা দেওয়ার খাত হচ্ছে- ফকির ও মিসকিন। আবার অনেক ইসলামিক স্কলাররা বলেছেন, সবাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ফিতরা আদায় করবে। কারণ ফিতরা দেওয়ার মাধ্যমে রোজাদারের রোজার দোষ-ত্রুটিগুলো মার্জনাকারী। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনর্থক কাজ ও অশ্লীলতা থেকে পবিত্রকরণ এবং মিসকিনদের জন্য খাদ্যের উৎস হিসেবে রোজা পালনকারীর উপর ফিতরা ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে তা আদায় করবে তা কবুলযোগ্য ফিতরা হিসেবে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের পর আদায় করবে সেটা সাধারণ সাদকা হিসেবে গণ্য হবে। (আবু দাউদ)

ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত ফিতরা

৯ এপ্রিল (শনিবার) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভায় এ বছরের ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। তাহলো-

১. গমের বাজার মূল্য অনুযায়ী : ৭৫ টাকা।

২. যবের বাজার মূল্য অনুযায়ী : ৩০০ টাকা।

৩. কিসমিসের বাজার মূল্য অনুযায়ী : ১৪২০ টাকা।

৪. খেজুরের বাজার মূল্য অনুযায়ী : ১৬৫০ টাকা।

৫. পনিরের বাজার মূল্য অনুযায়ী : ২৩১০ টাকা।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সর্বোচ্চ পরিমাণ ২৩১০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা। তাতে সামর্থ্য না হলে যার যার অবস্থা অনুযায়ী পণ্যের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে ফিতরা আদায় করা। একান্তই যাদের সামর্থ্য নেই, তাদের জনপ্রতি ৭৫ টাকা দিয়ে ফিতরা করা।