যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

ব্যবসায় সুফল লাভে মহানবীর ৭ নির্দেশনা

ব্যবসা-বাণিজ্যে বরকত লাভের কিছু আমল আছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো

এক. হালালভাবে ব্যবসা করা

ব্যবসায় সফলতা ও বরকত লাভের অন্যতম আমল হলো, হালালভাবে ব্যবসা করা, হালাল পণ্যের ব্যবসা করা। হারাম পদ্ধতিতে বা হারাম পণ্যের ব্যবসায় বরকত থাকে না। বাহ্যত তাতে অনেক মুনাফা দেখা গেলেও দিনশেষে সে ব্যবসায় দুশ্চিন্তা, হতাশা ও বিপদাপদ ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না।

আবু সাইদ আল খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়ালেন, অতঃপর লোকদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। তিনি বলেন, হে লোক সকল, আর যে ব্যক্তি অসৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে সে অনেক খাচ্ছে কিন্তু পরিতৃপ্ত হতে পারছে না। (মুসলিম, হাদিস : ২৩১১)

দুই.ভোরবেলায় ব্যবসার কাজে বের হওয়া

নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের ভোরের বরকতপ্রসঙ্গে দোয়া করেছেন, তাই ব্যবসায় বরকত পেতে ভোরবেলায় কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করা উচিত। মহানবী (সা.) বলেন, হে আল্লাহ, আপনি আমার উম্মতকে ভোরের বরকত দান করুন। তিনি কোনো ক্ষুদ্র বা বিশাল বাহিনীকে কোথাও প্রেরণ করলে দিনের প্রথমভাগেই পাঠাতেন। বর্ণনাকারী সাখর (রা.) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার পণ্যদ্রব্য দিনের প্রথমভাগে (ভোরে) পাঠাতেন, ফলে তিনি সম্পদশালী হয়েছিলেন এবং এভাবে তিনি অনেক সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬০৬)

তিন. ব্যস্ততায় আল্লাহর ইবাদত ভুলে না যাওয়া

যারা কাজের চাপে কিংবা ব্যবসার ব্যস্ততায়ও মহান আল্লাহর স্মরণকে ভুলে যাবে না, মহান আল্লাহ তাদের উত্কৃষ্ট প্রতিদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, সেই সব লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তাদের কর্মের উত্কৃষ্টতম প্রতিদান দেবেন। অর্থাৎ শুধু কর্মের প্রতিদানই শেষ নয়; বরং আল্লাহ নিজ কৃপায় তাদের বাড়তি নিয়ামতও দান করবেন। (সুরা : নুর, আয়াত : ৩৭-৩৮)

চার. সততা ও তাকওয়া অবলম্বন করা

সততা ও তাকওয়ার সঙ্গে ব্যবসা করলে তা যেমন কিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে বসাবে, তেমনি এগুলো পরিত্যাগ করলে কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বড় পাপিষ্ঠরূপে উঠতে হবে। তাই ব্যবসায় সততা ও তাকওয়া অবলম্বন করা আবশ্যক। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১০)। তা ছাড়া রাসুল (সা.) বলেছেন, মিথ্যা কসম পণ্য চালু করে দেয় বটে, কিন্তু বরকত নিশ্চিহ্ন করে দেয়। (বুখারি, হাদিস : ২০৮৭)

পাঁচ. যৌথ ব্যবসায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা

যৌথ ব্যবসায় সততা বজায় রাখলে মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত ও বরকত পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ বলেন, আমি দুই অংশীদারের মধ্যে তৃতীয় অংশীদার, যতক্ষণ তারা একে অন্যের সঙ্গে বিশ্বাঘাতকতা না করে। যখন এক অংশীদার অপরের সঙ্গে খিয়ানত করে, তখন আমি তাদের থেকে সরে যাই। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩৮৩)

ছয়. ইসলামের বিধি-বিধান মেনে ব্যবসা করা

হকভাবে ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই ইসলামের ব্যবসাসংক্রান্ত বিধানগুলো জেনে সে মোতাবেক ব্যবসা করার চেষ্টা করা মুমিনের দায়িত্ব। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে বিজ্ঞ আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করে করা আবশ্যক। নইলে রিজিকে হারামের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। ওমর (রা.) বলেছেন, যার দ্বিন প্রসঙ্গে সঠিক জ্ঞান আছে শুধু সে-ই যেন আমাদের বাজারে ব্যবসা করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৪৮৭)

সাত. পারিশ্রমিক প্রদানে অবহেলা না করা

ব্যবসায় বরকত লাভের গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো, কর্মচারীর অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া। যারা কর্মচারীদের হক নষ্ট করে তার বিরুদ্ধে স্বয়ং আল্লাহ বাদী হবেন। (বুখারি, হাদিস : ২২২৭)