যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

ভোরে ঘুম থেকে উঠলে যে বরকত লাভ হয়

ভোরে ঘুম থেকে ওঠা সারাদিনের কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাতসকালে ওঠতে পারলে সময়ের পরিধি বেড়ে যায়। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ ভোররাতে বা দিনের শুরুর অংশে কল্যাণ ও বরকত সবচেয়ে বেশি থাকে। শুধু ইবাদত-বন্দেগিই নয়, পার্থিব কাজের জন্যও সময়টি খুবই উপযুক্ত, মনোরম ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ। রাসুল (সা.) ভোরবেলার কাজের জন্য বরকতের দোয়া করেছেন।

সখর গামেদি (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) এ দোয়া করেছেন

হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুর অংশ বরকতময় করুন।

(তিরমিজি, হাদিস : ১১৯৫)

আরো বর্ণিত হয়েছে, এ কারণে রাসুল (সা.) কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। বর্ণনাকারী বলেন, সখর (রা.)- একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার ব্যবসায়িক কার্যক্রমও ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তার ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি বিপুল প্রাচুর্য লাভ করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬০৬)

এছাড়াও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ভোরে বান্দার রিজিক বণ্টন হয়। যারা ওই সময়টাতে ঘুমিয়ে থাকে, তারা সার্বিক সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। রিজিকে বরকতের ছোঁয়া পায় না। রাসুল (সা.) বলেন, সকালবেলায় রিজিকের অন্বেষণ করো! কারণ, সকালবেলা বরকতপূর্ণ ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়।

(মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ৬২২০)

রাসুল (সা.)-এর আদুরে কন্য ফাতেমা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) ভোরবেলা আমার ঘরে এসে আমাকে ঘুমে দেখতে পেলেন, তখন তিনি আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিয়ে বললেন,

হে প্রিয় কন্যা! ওঠো! তোমার রবের পক্ষ থেকে রিজিক গ্রহণ করো! অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা আল্লাহ তাআলা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মাঝে রিজিক বণ্টন করে থাকেন।

(আত-তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস : ২৬১৬)

যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা, কর্মোচ্ছল ও প্রাণবন্ত হয়ে থাকে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, সারা দিন উজ্জীবিত থাকতে চাইলে অবশ্যই সকালে ওঠা উচিত। ভোরে ওঠার অভ্যাস গোটা দিনটাকে আরও একটু বড় করে দেয়। সুস্থ থাকার জন্য সকালে একটু হাঁটা, ব্যায়াম করা, সময় নিয়ে আমিষসমৃদ্ধ নাশতা খাওয়া দরকার; যেটা সম্ভব হয় সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারলে। নিজের জন্যও একটু পরিচ্ছন্ন সময় পাওয়া যায় ভোরে উঠলে। যারা ভাবেন ভোরে ওঠা অসম্ভব, তাদের জন্য বলব, অভ্যাসই মানুষের স্বভাব গঠন করে।