কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

পুতুল খেলা কি ইসলামে বৈধ?

কাপড়ের পুতুলের চোখ-মুখ না থাকলে তথা প্রাণির অবস্থান পরিস্ফুটিত না হলে পুতুল ব্যবহার করার সুযোগ আছে। হজরত আয়শা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা কাপড়ের পুতুল দিয়ে খেলেছিলেন। এসবের চোখ-কান তথা মুখের অবয়ব ছিল না। পক্ষান্তরে যে সকল বস্তুর প্রাণ আছে, এমন প্রাণীর চোখ,কান, মুখ থাকা অবস্থায় উক্ত প্রাণীর ছবি আঁকা, তা ব্যবহার করা, তা ঘরে রাখা এবং তা দিয়ে খেলাধুলা করা কোনটিই জায়েজ নয়।

তাই বাচ্চাদের জন্য কোনো প্রাণীর পুরোপুরি অবয়ব আছে এমন প্রাণীর পুতুল দিয়ে খেলা জায়েজ হবে না। বিজ্ঞাপন হজরত আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ফেরেশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর থাকে এবং ঐ ঘরেও না, যে ঘরে ছবি থাকে। (বুখারি ৫৯৪৯)

যদি পুতুলের পরিপূর্ণ মাথা না থাকে; অর্থাৎ পুতুলের যদি চোখ, কান, নাক কিংবা মুখ দেওয়া না হয়, তবে ছোট বাচ্চাদের জন্য এ ধরনের পুতুল তৈরি করা এবং তাদেরকে খেলতে দেওয়া জায়েজ আছে। গহরদ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস এবং আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমসহ আরও অনেক সাহাবি থেকে বর্ণিত, যে ছবির মাথা নেই সেটি পূর্ণাঙ্গ ছবি নয়; তাই তা জায়েজ আছে। বিজ্ঞাপন অবয়বসহ ছবির ব্যবহার সম্পর্কে একাধিক হাদিসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তাহলো- ১. হজরত আয়শা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, আমাদের একটা পর্দা ছিল। এতে পাখির ছবি ছিল। যখন কেউ ভিতরে আসতো তখন এ ছবি তার সামনে পড়ত। রাসূল সা. আমাকে বললেন, এটি উল্টিয়ে দাও, কেননা, যখনই আমি ভিতরে আসি, আর এটা দেখি, দুনিয়ার কথা মনে পড়ে। (মুসলিম ৫৬৪৩)

২. হজরত আয়শা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি আমার দরজায় ডানাযুক্ত ঘোড়ার ছবি সম্বলিত একটি রেশমি পর্দা টানিয়ে রেখেছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিলেন, এবং আমি তা সরিয়ে ফেললাম। (মুসলিম ৫৬৪৫)

৩. হজরত আয়শা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমার কাছে আসলেন। আমি তখন ছবিযুক্ত একটি পর্দা টানাতে ব্যস্ত ছিলাম। তা দেখে তাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তন হয়ে গেল। এরপর পর্দাটা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, কেয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা আল্লাহর সৃষ্টির সাদৃশ্য তৈরি করে। (মুসলিম ৫৬৪৭)

আরেক হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। এতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা. তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদিস শুনাচ্ছি, যা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শুনেছি। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, সকল চিত্রকরই দোজখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোজখে তাকে শাস্তি দেবে । ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা বা এমন বস্তুর ছবি তৈরি কর যা প্রাণী নয়। (মুসলিম ৫৬৬২)