জুমার দিন মুসলিম উম্মাহর সাপ্তাহিক ঈদ। ইবাদতের বসন্ত। বরকত ও ফজিলতপূর্ণ একটি দিন। এ দিন বাবা-ছেলে, যুবক-বৃদ্ধা, শিশু-তরুণ সবাই উপস্থিত হয় মসজিদে। এক চমৎকার দৃশ্যের অবতারণা হয়। ফেরেশতাদের পাক জবান দোয়া করে মসজিদে ছুটে আসা মুসল্লিদের জন্য।জুমার দিনের ফজিলতপূর্ণ অনেক আমল রয়েছে। এ আমলগুলো করে দিনটিকে বানানো যায় আরো বরকতময়। এগুলোর মধ্যে একটি আমল হলো জুমার দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করার আমল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে, তা তার জন্য নুর হয়ে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।সুরা কাহাফ কোরআনুল কারিমের ১৮নং সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১০। এ সুরায় আসহাবে কাহাফের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যারা নিজেদের দীন হেফাজতের জন্য কোনো এক পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করেছিলেন। তাদের ঘটনা বর্ণিত হওয়ার কারণেই এ সুরার নাম হয়েছে কাহাফ ।
হজরত আনাস (রা.) বলেন, পূর্ণ সুরা কাহাফ একসঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এটি নাজিল হওয়ার সময় ৭০ হাজার ফেরেশতা দুনিয়াতে অবতরণ করেছিলেন। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহাফ পড়বে তার জন্য সুরাটি তার জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত নুর হবে এবং যে এ সুরার শেষ দশ আয়াত পড়বে সে দাজ্জালের গণ্ডির বাইরে থাকবে, দাজ্জাল তার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে যা কেয়ামতের দিন আলো দেবে এবং পূর্ববর্তী জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের সময় হলো বৃহস্পতিবার দিনের সূর্য ডোবার পর থেকে শুক্রবারের সূর্য ডোবা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে সুরা কাহাফ পাঠ করলে হাদিসে উল্লিখিত ফজিলত ও সওয়াব পাওয়া যাবে। পূর্ণ সুরা এক বৈঠকে পড়া জরুরি নয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে ভাগ করে সুরাটি পড়ে শেষ করলেও একই সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের প্রতি জুমাবারে এ সুরাটি পড়ার ও বোঝার তৌফিক দিন। আমীন।