যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

মুসলমান কেন হিজরি বছরের হিসাব রাখবে?

দুনিয়া সৃষ্টি সূচনালগ্ন থেকেই তারিখ পদ্ধতির প্রচলন। আর তারিখ পদ্ধতির মধ্যে একটি অনন্য মর্যাদাসম্পন্ন নাম হিজরি সন। হিজরতের ইতিহাস, ইবাদত-বন্দেগির দিনক্ষণ সম্পর্কিত কারণে হিজরি বর্ষ মুসলমানদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই হিজরি সনের হিসার রাখার বিধান কি?

হ্যাঁ, হিজরি সনের তারিখ সম্পর্কে হিসাব রাখা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক। তারিখ পদ্ধতির গুরুত্ব আছে বলেই দুনিয়া সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মাস-বছরের হিসাব সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষনা দেন-
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর (কাছে) গণনায় মাসের সংখ্যা বারটি; যা আল্লাহর কিতাব (লাওহে মাহফুজ) অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস (রজব, জিলকদ,জিলহজ ও মহররম) মর্যাদাপূর্ণ। এটাই দীনের সহজ-সরল (দাবী)। সুরা তাওবাহ : আয়াত ৩৬)

হিজরি সনের হিসাব রাখার প্রয়োজনীয়তা ইসলামি শরিয়তের অনেক বিধানাবলী পালন হিজরি সন ও চন্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল; তাই গুরুত্বপূর্ণ এসব ইবাদত-বন্দেগির জন্য হিজরি সনের আলোকে চন্দ্র মাসের হিসাব রাখা ফরজে কেফায়া। চাঁদের হিসাব অনুযায়ী হিজরি সনের হিসাব রাখা সুন্নাতের অনুসরণ এবং অনুকরণও বটে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনাও এমনই।

এ কারণেই মুমিন মুসলমানের জন্য হিজরি সনের গুরুত্ব অনেক বেশি। হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের অনেক ইবাদত-আমলের সংশ্লিষ্ট রয়েছে। যা হিসাব না রাখলে ঐ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। এসবের অন্যতম হলো-
১. রমজান মাসব্যাপী ফরজ রোজা পালন।
২. ঈদের তারিখ নির্ধারণ।
৩. হজের তারিখ নির্ধারণ ও হজ পালন।
৪. তাকবিরে তাশরিকের দিন নির্ধারণ।
৫. কুরবানির দিন নির্ধারণ।
৬. জাকাত প্রদানে বছর গণনা বা হিসাব।
এ ছাড়াও প্র্যত্যেক আরবি মাসেই রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত ও নফল ইবাদত। যা হিজরি সনের মাসের হিসাবের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এসব ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল ইবাদত-বন্দেগি অন্যান্য বছরের হিসাব অনুযায়ী পালন করা সম্ভব নয়।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হিজরি সনের হিসাব যথাযথভারে রাখা জরুরি। যেন সবার জন্য ইসলামের সব গুরুত্বপূর্ণ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল ইবাদত-আমলগুলো যথা সময়ে যথাযথভাবে সম্পন্ন করা যায়।

যেহেতু ইসলামি শরিয়তে হিজরি সনের হিসাব রাখা ফরজে কেফায়া ও প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাহ; তাই মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেকেরই উচিত, হিজরি সনের হিসাব রাখা। হিজরি সনের হিসাব অনুযায়ী প্রতি মাসের রোজা ও অন্যান্য আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করা।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হিজরি সনের হিসাব যথাযথভাবে রেখে আমল-ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনায় দিন-মাস-বছরের হিসাব রেখে দুনিয়ার কল্যাণ ও পরকালের মুক্তির তাওফিক দান করুন। আমিন।