যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

ঈমানের উপর অটল থাকার আমল ও দোয়া

মুসলমানের জন্য সর্বোত্তম সম্পদ ঈমান। ঈমানহীন কোনো আমলেরই মূল্য নেই। এ কারণেই সুরা আসরে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, সময়ের কসম! নিশ্চয়ই সব মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। শুধু তারা ব্যতিত; যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে। (সুরা আসর : আয়াত ১-২)

এ আয়াতে প্রথমে ঈমানের কথা বলা হয়েছে। যারা ঈমানদার তাদের নেক আমলই গ্রহণযোগ্য হবে। তাই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ দোয়া করা

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ উচ্চারণ :ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকিম। সিরাতাল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়া লাদ্দাল্লিন।

অর্থ : আমাদের সহজ সরল পথের হেদায়েত দিন। যে পথে চলা লোকদের ওপর আপনি নেয়ামত দান করেছেন। অভিশপ্ত ও গোমরাহির পথ থেকে বিরত রাখেন।

সুতরাং সঠিক ঈমান বা বিশ্বাসের ওপর স্থির থাকা মুমিন মুসলমানের প্রথম কাজ। তাই ঈমানের উপর অটল থাকতে রয়েছে কিছু করণীয়। যা মানুষের দুনিয়া ও পরকালের জীবনে প্রশান্তি ও সৌভাগ্য বয়ে আনবে। আর এজন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। মানুষের এসব করণীয় ও প্রার্থনার দিকনির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। তাহলো-

ঈমানের উপর অটল থাকা আমল ১. কোরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা

আল্লাহ ও তার রাসুলের দেওয়া বিধান, হুকুম-আহকামগুলো যথাযথ মেনে চলা। কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন পরিচালনাই ঈমানের উপর অটল থাকার উপায়। আর তাতে মিলবে দুনিয়া ও পরকালের প্রশান্তি। তাইতো প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-

তোমরা পথভ্রষ্ট হবে নাযখন তোমরা দুটো জিনিসকে আঁকড়ে ধরবে। আর তার একটি হলো আল্লাহর কিতাব আর অন্যটি হলো তার রাসুলের সুন্নাহ। ২. নেক আমল করা

মুমিন বান্দা যে কাজে নিজের জীবন অতিবাহিত করবে, সে কাজের ওপরই তার মৃত্যু হবে। যদি কেউ কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করে তবে তার মৃত্যুও কোরআন-সুন্নাহর আলোকে হবে। এ কারণেই দুনিয়ার জীবনে কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নেক আমলে জীবন সাজানো জরুরি।

৩. সত্যবাদীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা

যারা সত্য ও ন্যয়ের উপর অটল-অবিচল; দ্বীন ও ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত; কোরআন-সুন্নাহর প্রতিনিধিত্ব করে; সেসব লোকের সংস্পর্শে থাকা ও তাদের কথা মতো জীবন পরিচালনা করা। আর তাতে ঈমানের উপর অটল ও অবিচল থাকা সহজ হবে। তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন-

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (তাকে ভয় করার মাধ্যম হিসেবে) সাদেক্বিন বা সত্যবাদীদের সঙ্গে চলাফেরা কর। ৪. সব সময় আল্লাহর জিকির করা

মসজিদে বা ঘরে বসে শুধু সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ পড়াই জিকির নয়; বরং ফরজ-ওয়াজিব ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি নীতি নৈতিকতার আলোকে আল্লাহর নাম নিয়ে জীবনের প্রতিটি কাজ করাই হবে আল্লাহর জিকির। কেউ উপকার করলে তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করাও জিকির। কেউ বিপদে পড়লে তাকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাও জিকির।

ভালো কাজ করলে দুনিয়াতেই তাদের ঈমান বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আর মৃত্যুর সময় তারাও প্রশান্তি ও সৌভাগ্য লাভ করেন। এ কারণেই সাহাবায়ে কেরামের জিজ্ঞাসার জবাবে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

তোমরা তোমাদের ঈমানকে নবায়ন কর। সাহাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন, কীভাবে ঈমান নবায়ন করব? হে আল্লাহর রাসুল!তখন তিনি বললেন, বেশি বেশি- لَا اِلَهَ اِلَّا الله লা ইলাহা ইল্লাল্লাহপড়তে থাকা। দোয়া করা

ঈমানের উপর অটল থাকতে নির্জনে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা। যাতে দুনিয়ার জীবনের সার্বিক কল্যাণ ও পরকালের অন্তিম মুহূর্তে ঈমান ও প্রশান্তির মৃত্যু নসবি হয়। তাই চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করা। বেশি বেশি এ দোয়াগুলো করা-

১.اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ উচ্চারণ : ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকিম। সিরাতাল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়া লাদ্দাল্লিন। অর্থ :আমাদের সহজ সরল পথের হেদায়েত দিন। যে পথে চলা লোকদের ওপর আপনি নেয়ামত দান করেছেন। অভিশপ্ত ও গোমরাহির পথ থেকে বিরত রাখেন। ২.رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ উচ্চারণ : রাব্বানা আফরিগ আলাইনা সাবরাও ওয়া তাওয়াফ্ফানা মুসলিমিন। অর্থ :হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের ধৈর্যদান করুন এবং মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান করুন। ৩.رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ উচ্চারণ : রাব্বানা লা তুযেগ কুলুবানা বাদা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আংতাল ওয়াহহাব। অর্থ :হে আমাদের প্রভু! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে ধাবিত করো না; এবং তোমার কাছ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর; নিশ্চয় তুমিই সবকিছুর দাতা। ৪.اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আলামুওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আলামু। <অর্থ :হে আল্লাহ! আমার জানামতে আপনার প্রতি শিরক হয় এমন ভয়াবহ অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার আশ্রয় চাই। আর আমার অজানায় ঘটে যাওয়া শিরক থেকেও ক্ষমা প্রার্থনা করি।