যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

স্বস্তি ফিরিয়ে আনে তাওবা

ভুল-শুদ্ধ মিলেই জীবন। ত্রুটিহীন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।জীবনচলার পথে নানা রকমের স্খলন হয়েই যায়। কখনো চেতনে কখনোবা অবচেতনে।
তবে সত্যিকার মানুষ কখনো ভুল-ত্রুটিতে অটল ও অবিচল থাকতে পারে না। বিবেকবোধ, দায়বদ্ধতা ও পরকালের ভয় তাকে সবসময় অনুশোচনায় রাখে।
ভেতরে ভেতরে অস্থির করে তোলে। তাই অপরাধ মোচনে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে।
মানবজীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ও স্খলন হলো, আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা ও রাসুল (সা.) এর সুন্নাতের বিমুখতা। আর এরই নাম গুনাহ।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই যারা গুনাহ করে, অচিরেই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেয়া হবে। (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০)

গুনাহের কারণে দুনিয়া-আখেরাতে প্রত্যেককেই শাস্তি পেতে হবে। তবে তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, আর আমি অবশ্যই ক্ষমাকারী তার জন্য, যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত হয়। (সুরা ত্বাহা, আয়াত : ৮২)

গুনাহগার বান্দা যখন তাওবা করে তখন আল্লাহ তাআলা অত্যধিক খুশি হন। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া উট খুঁজে পেয়ে যতটা খুশি হও, আল্লাহ তাআলা তার বান্দার তাওবাতে এরচেয়েও বেশি খুশি হন। (বুখারি, হাদিস নং : ৬৭০৯)
মূলত তাওবা হলো অতীতের অপরাধ ও ভুলের কারণে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া। আল্লাহর দরবারে ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন ভুল প্রকাশিত না হওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার করা। সেই সঙ্গে কারো হক-পাওনা বিনষ্ট করে থাকলে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া। তবে প্রকাশ্য গুনাহের জন্য অবশ্যই প্রকাশ্যে তাওবা করতে হবে।
ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা.) বলেন, তাওবা হলো ছয়টি বিষয়ের সমষ্টি। ১. নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। ২. ছুটে যাওয়া ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতগুলো আদায় করা। ৩. অন্যের সম্পত্তি- অধিকার নষ্ট করে থাকলে, তা ফেরত দেয়া। ৪. শারীরিক বা মৌখিকভাবে কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে, ক্ষমা চাওয়া। ৫. ভবিষ্যতে পাপকাজ পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্প করা। ৬. আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সমর্পণ করা।

আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাদের তাওবার নির্দেশ দিয়েছেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো, খাঁটি তাওবা। (সুরা তাহরিম, আয়াত : ০৮)
আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন, তাওবাকারী তাদের অন্যতম। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)
মানুষমাত্রই পরিচ্ছন্ন ও সুখী জীবনের প্রত্যাশী। ঝামেলাহীন সম্মান-মর্যাদায় বেঁচে থাকতে চায় প্রতিটি ব্যক্তি। কিন্তু এ প্রত্যাশা পূরণে সবচেয়ে বড় বাধা আমাদের গুনাহ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয়ই তার জীবন হবে সংকুচিত। (সুরা ত্বাহা, আয়াত : ১২৪)
কোরআনের ভাষ্যে ওই সমস্ত লোকের জন্য সংকীর্ণ ও তিক্ত জীবনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যারা আল্লাহর কোরআন ও তার রাসুলের প্রদর্শিত পথে চলতে বিমুখ হয়। আর এরই নাম গুনাহ।