সমস্যা যখন ডালপালা ছড়িয়ে দেশ-জাতি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক সীমা অতিক্রম করে তখন সেই সমস্যার মূলোৎপাটন করা দুরূহ হয়ে পড়ে, মানবজাতির জন্য জীবন পরিচালনার সর্বোত্তম গাইডলাইন দিতে পারেন একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিন, তাই আল্লাহ প্রদত্ত কুরআন এবং রাসূল সা: কর্তৃক হাদিস থেকে আমরা পেতে পারি যেকোনো সমস্যার সমাধান।
আল্লাহ বলেন, পুরুষরা নারীদের ওপর দায়িত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের ওপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে (সূরা নিসা-৩৪)।
ইসলামী আইন শুধু বাহ্যিক পর্দা নয়, বরং মানসিক পবিত্রতা ও অন্তরের পরিচ্ছন্নতার নাম, খোলাফায়ে রাশেদার আমলের শিক্ষা গ্রহণ করে নারীর অসম্মান হয় এমন যেকোনো বিনোদন মাধ্যম সমূলে উৎপাটিত করতে হবে এবং একজন নারীকে তার নারী প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি নারীরই আগে নিজেদের ইজ্জতের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা সম্পূর্ণরূপে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং সুন্দর জীবন ও পবিত্র অনুভূতির লক্ষ্যে পরিবার কর্তৃক বিয়ের মতো হালাল বিধানকে সহজ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে মুসলিমদের জাহেলিয়াতের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রথমেই নিজেদের মানমর্যাদা ও দায়িত্ব বোঝার জন্য ইলম অর্জন জরুরি। ইসলাম সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে যা নিয়ে আমরা একটু বেশিই দৌড়ঝাঁপ করি এবং উপমা ভুলে যাই যা জান্নাতি নারীদের মাধ্যমে এসেছে। আমরা আমাদের দ্বীনের জন্য কী ত্যাগ করতে পেরেছি তা নিয়ে চিন্তা করা উচিত নয় কি?
এক যুগ বা আরো বেশি পড়াশোনা করে মহান আল্লহর জন্য যে তার দুনিয়ার চাকচিক্য বিসর্জন দিতে পেরেছে সেই আল্লাহর প্রিয়, আর যে সমাজের জন্য আল্লহর নীতিকে বিসর্জন দিলো সে তো বোকা। এ পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েদের কর্মক্ষেত্র কেমন হওয়া উচিত এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এখন আমরা মেয়েদের মধ্যে যে নানা বিপর্যয় দেখি তার একটি কারণ হিসেবে কাজ করে এই বিষয়টি।মেয়েদের চাকরির বিষয়ে বিশিষ্ট মুসলিম স্কলার শাইখ উসাইমিন রহ: বলেন, নারীরা যেখানে কাজ করবে সে কর্মক্ষেত্র শুধু নারীদের জন্য হতে হবে। পুরুষদের সাথে কাজ করা নারীদের জন্য জায়েজ নয়। কারণ পুরুষদের সাথে তাকে মিশতে হলে তা হতে পারে মারাত্মক ফিতনার কারণ। শায়েখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ দা: বা: বলেন, শরিয়াহর মূল নীতির একটি হলো নারীরা গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্য ছাড়া বাইরে যাবে না।আল্লাহ বলেন,আর তোমরা গৃহে অবস্থান করো এবং জাহেলি যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াবে না (সূরা আল আহজাব-৩৩)
। তবে একজন নারীর যদি জীবন যাপনের ক্ষেত্রে বাইরে কাজ করার অত্যধিক প্রয়োজন দেখা দেয় তবে সে নিচে উল্লিখিত শর্তে কাজ করতে পারে, শর্তগুলো এই রকম
১. কাজটি প্রকৃতিগতভাবে নারীদের জন্য উপযুক্ত হতে হবে।
২. কর্মস্থলটি শুধু নারীদের জন্যই নির্দিষ্ট থাকবে এবং সেখানে নন-মাহরামদের সাথে মেলামেশার ব্যবস্থা থাকবে না।
৩. কাজের সময় সে পূর্ণরূপে শরিয়াহ অনুযায়ী পর্দা করবে।
৪. তার কাজ তাকে মাহরাম ছাড়া ভ্রমণে বাধ্য করবে না।
৫. তার বাইরে কাজ করতে যাওয়া কোনো হারাম কাজে জড়িত করবে না। যেমন ড্রাইভারের সাথে একাকী অবস্থান করা, পারফিউম ব্যবহার করা যেন নন-মাহরামরা নাকে তার ঘ্রাণ পায়।
৬. কাজ এমন হবে না যা তার প্রয়োজনীয় বিষয়টিকে উপেক্ষা করতে বাধ্য করে, যেমন গৃহের দেখাশোনা, স্বামী-সন্তানের যত নেয়া ইত্যাদি।
আল্লামা ত্বকী উসমানী দা: বা: বলেন, আশ্চর্যের বিষয় এই যে নারী যখন গৃহের কর্ম সম্পাদনে ব্যস্ত থাকে আর স্বামী-সন্তানের দেখাশোনা করে তখন সেটা হয় পশ্চাৎপদতা ও মৌলবাদিতা। অথচ এই নারীই যখন বাইরের জগতে নিজেকে প্রদর্শন করে বেড়ায়, গায়রে মাহরামদের চিত্ত প্রশান্তির উপকরণ হয় তখন সেটি হয় মর্যাদার।&