আল্লাহ তায়ালার খাঁটি বান্দাদের অন্যতম গুণ হলো তারা রাতে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর সান্নিধ্য লাভের জন্য সিজদা, কিয়াম ও তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তারা রাত অতিবাহিত করেন তাদের রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে । আল্লাহ তায়ালার খাঁটি বান্দারাই কিয়ামুল লাইল করেন এবং তারা আল্লাহ তায়ালাকে ডাকেন ভয় ও আশায়। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা থাকে, তারা তাদের রবকে ডাকে আশঙ্কা ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দান করেছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। ( সূরা আস-সাজদাহ-১৬)
আমাদের সমাজে যখন হাজারো মানুষ রাতে নাচ-গান, শরাব পান ও খেল-তামাশার মতো আমোদ প্রমোদে লিপ্ত; তখন আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দারা আখিরাতের ভয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনকারী, রাতের বেলা সিজদা করে ও দাঁড়িয়ে থাকে আখিরাতের ভয় করে ও নিজের রবের রহমতের আশায়। (সূরা আয-যুমার-৯) হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেন, ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো মধ্য রাতের সালাত । (সহিহ মুসলিম-২৮১৩)
মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় রাসূল সা:-কে কিয়ামুল লাইল ও তাহাজ্জুদের সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বস্ত্রাবৃত! রাতে সালাতে দাঁড়ান, কিছু অংশ ছাড়া, আধা রাত বা তার চেয়েও একটু কম। অথবা তার চেয়েও একটু বৃদ্ধি করুন আর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াত করুন। (সূরা মুযযাম্মিল : ১-৪) অন্য আয়াতে বলেন, আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করুন, এটি আপনার জন্য অতিরিক্ত। আপনার রব আপনাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন। (সূরা বনি ইসরাইল-৭৯)
কিয়ামুল লাইলের অনেক ফজিলত রয়েছে; যেমন- দোয়া কবুল হয়, গুনাহ ও পাপ ক্ষমা করা হয়। রাসূল সা: বলেন, আমাদের বরকতময় রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে প্রথম আসমানে অবতরণ করেন। তিনি বলেন, কে আমার কাছে দোয়া করবে আমি তার দোয়া কবুল করব, কে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেবো, কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করব। (সহিহ বুখারি-৪৮৩৭) আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কিয়ামুল লাইলে অভ্যস্ত হওয়ার তৌফিক দান করুন।