এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদজুলুমকারীদের জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছেকোরআন ও হাদিসে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারযে পদ্ধতিতে হজ করা উত্তম২১৫ বছর আগের মসজিদ রংপুরের প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম
No icon

হজ কত প্রকার ও কি কি?

হজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের ওপর হজ্ব পালন করা ফরয। হজ একটি শারীরিক, আর্থিক ও আত্নিক ইবাদত। হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ: ‘ইচ্ছা’ বা ‘সংকল্প’ একটি যাত্রায় অংশ নেওয়া, নিয়ত করা, দর্শন করা, এরাদা করা, গমন করা, ইচ্ছা করা, প্রতিজ্ঞা করাসহ যে কোনো মহৎ কাজের ইচ্ছা করা।

হজ এর পারিভাষিক অর্থ: শরিয়তের পরিভাষায় নির্দিষ্ট দিনে নিয়তসহ ইহরামরত অবস্থায় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা এবং বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা।

আবার কেউ বলেন, জিলহজের ৯ তারিখ ইহরাম বেঁধে আরাফাতের মাঠে অবস্থানসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থানে নির্ধারিত কয়েকটি আমল যথাযথভাবে আদায় করে কাবা গৃহ তাওয়াফ করাকে হজ বলে।

হজ বা হজ্জ বা হজ আরবি: হজ্জ ইসলাম ধর্ম পালনকারী অর্থাৎ মুসলমানদের জন্য একটি বুনয়াদী ইবাদত।এটি ইসলাম ধর্মের স্তম্ভ সমূহের বিশেষ একটি স্তম্ভ।  যেমন হাদিসে ইরশাদ হয়েছে:অর্থ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি: হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন; রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: পাঁচটি জিনিসের উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে। 

এগুলো হলো:১. আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দাহ ও রাসূল একথার সাক্ষ্য দেয়া। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. যাকাত দেয়া। ৪. হজ্জ করা। ৫. রমজান মাসের রোজা রাখা।

হজ তিন প্রকার

হজে তামাত্তু: হজের মাসগুলোয় ওমরাহর ইহরাম বেঁধে প্রথমে ওমরাহ পালন করে ইহরাম খুলে ফেলা, অতঃপর হজের জন্য আবার ইহরাম বেঁধে হজ সমাপন করাকে ‘তামাত্তু হজ’ বলে। তামাত্তু হজে দমে শোকর বা হজের শোকরিয়া স্বরূপ কুরবানি করা ওয়াজিব।

হজে কিরান: হজের মাসগুলোয় ওমরাহ ও হজ একসঙ্গে উভয়টির ইহরাম বেঁধে প্রথমে ওমরাহ পালন করে ইহরাম না খুলে ওই একই ইহরামে হজ সমাপন করাকে ‘হজে কিরান’ বলে। কিরান হজে দমে শোকর বা হজের শোকরিয়া স্বরূপ কুরবানি করা ওয়াজিব।

হজে ইফরাদ: হজের মাসগুলোয় শুধু হজের ইহরাম বেঁধে হজ সমাপন করাকে ‘হজে ইফরাদ’ বলে। এতে কোনো ওমরাহ পালন করা হয় না। ইফরাদ হজে দমে শোকর বা হজের শুকরিয়া স্বরূপ কুরবানি করা মুস্তাহাব।

হজের ফরজ

১. ইহরাম বাঁধা। ২. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা অর্থাৎ ৯ জিলহজের সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে কোনো সময় এক মুহূর্তের জন্য হলেও আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। ৩. তাওয়াফে জিয়ারাহ করা অর্থাৎ ১০ জিলহজের ভোর থেকে ১২ জিলহজের সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাইতুল্লাহ শরিফের তাওয়াফ করা।

হজের ওয়াজিব

(১) নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ইহরাম বাঁধা। (২) সায়ী অর্থাৎ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে দৌড়ানো। (৩) সাফা থেকে সায়ী শুরু করা। (৪) তাওয়াফের পর সায়ী করা (৫) সূর্যাস্ত পর্যন্ত উকুফে আরাফা করা। (৬) মুজদালিফায় উকুফ বা অবস্থান করা। (৭) মাগরিব এবং এশার নামাজ মুজদালিফায় এসে একত্রে এশার সময় পড়া। (৮) দশ তারিখ শুধু জামরাতুল আকাবায় এবং ১১ ও ১২ তারিখে তিন জামরায় রামি-পাথর নিক্ষেপ করা।

(৯) জামরাতুল আকাবার ‘রামি’ বা পাথর নিক্ষেপ দশ তারিখে হলক অর্থাৎ মস্তক মুণ্ডনের আগে করা। (১০) কুরবানির পর মাথা কামানো কিংবা চুল ছাঁটা। (১১) কিরান এবং তামাত্তু হজ পালনকারীর জন্য কুরবানি করা। (১২) তাওয়াফ হাতিমের বাইরে দিয়ে করা। (১৩) তাওয়াফ ডান দিক থেকে করা। (১৪) কঠিন অসুবিধা না থাকলে হেঁটে তাওয়াফ করা। (১৫) ওজুর সঙ্গে তাওয়াফ করা। (১৬) তাওয়াফের পর দুরাকাত নামাজ পড়া। (১৭) তাওয়াফের সময় সতর ঢাকা থাকা। (১৮) পাথর নিক্ষেপ করা ও কুরবানি করা, মাথা মুণ্ডানো এবং তাওয়াফ করার মধ্যে তারতিব বা ক্রম বজায় রাখা। (১৯) মিকাতের বাইরে অবস্থানকারীদের বিদায়ী তাওয়াফ করা। (২০) ইহরামের নিষিদ্ধ কাজগুলো না করা।