কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

ইসলামে অভ্যর্থনা জানানোর রীতি ও পদ্ধতি

অভ্যর্থনা (Welcome) হলো সংবর্ধনা, আপ্যায়ন, সমাদর ও সসম্মানে গ্রহণ ইত্যাদি। পৃথিবীতে ইসলাম এসেছে সভ্য, উন্নত ও চির সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলের ক্ষুদ্র থেকে শুরু করে সব বিষয়ে রয়েছে ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। অতিথিদের সম্মান ও অভ্যর্থনা জানানোর পদ্ধতি নিম্নরূপ

সালাম : সালামের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয় এবং শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঈমানি পরিবেশ তৈরি হয়।

মহান আল্লাহ প্রথম মানুষ হিসেবে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেন। এরপর ফেরেশতা কর্তৃক তাকে অভ্যর্থনা জানানোর আয়োজন করেন। আদম (আ.) ফেরেশতাদের উদ্দেশ্যে আস-সালামু আলাইকুম বললে ফেরেশতারা জবাবে বলেন, আস-সালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন মহান আল্লাহ আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করলেন, তখন বললেন, যাও, অমুক স্থানে ফেরেশতাদের একটি দল আছে, তাদের সালাম করো এবং তাদের জবাব শোনো। কারণ সেটিই তোমার এবং তোমার সন্তানদের অভিবাদন। আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের উদ্দেশ্যে আস-সালামু আলাইকুম বলে সালাম দিলেন। ফেরেশতারা জবাবে বলেন, আস-সালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ। তারা ওয়া রহমাতুল্লাহ বেশি বলেন। তখন থেকেই সালামের সূচনা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৭৩; মুসলিম, হাদিস : ৭৩৪২)

এ ছাড়া আগমনকারী অবস্থানকারীকে সালাম দেওয়াই ইসলামী শিষ্টাচার। হাদিসে বলা হয়েছে, আরোহী হেঁটে চলা ব্যক্তিকে, চলমান থেমে থাকা ব্যক্তিকে, আগমনকারী অবস্থানকারীকে, কমসংখ্যক বেশিসংখ্যক লোককে এবং কম বয়সী বেশি বয়সীকে সালাম প্রদান করবে। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৭৭; মুসলিম, হাদিস : ৫৭৭২)

মুসাফাহা বা করমর্দন : মুসাফাহা বা করমর্দন হলো সালামের পরিপূরক। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সালামের পরিপূর্ণতা হলো মুসাফাহা। (তিরমিজি, হাদিস: ২৭৩০)

সালাম বিনিময়ের পর উভয়ে উভয়ের দুই হাতের মাধ্যমে মুসাফাহা করাই সুন্নাহসম্মত।

কারণ প্রথমত, এ বিষয়ে ইমাম বুখারি (রহ.) সহিহ বুখারির মুসাফাহা অধ্যায়ে বলেছেন, উভয় হাত দ্বারা মুসাফাহা করার বর্ণনা। হাম্মাদ ইবন জায়েদ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবন মুবারক (রহ.)-এর সঙ্গে উভয় হাত দ্বারা মুসাফাহা করেছেন। (বুখারি, অধ্যায়: অনুমতি প্রার্থনা, অনুচ্ছেদ: দুহাত ধরে মুসাফাহা, শিরোনাম।

দ্বিতীয়ত, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে আত-তাহিয়্যাত এমনভাবে মুখস্থ করিয়েছেন যে আমার হাত তাঁর উভয় হাতের মধ্যে ছিল। বুখারি, হাদিস : ৫৯১০)

তৃতীয়ত, হাদিসে হাত দ্বারা মুসাফাহা করার কথা বর্ণিত হয়েছে। হাত বললে দুই হাতই বোঝায়। যেমন আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রকৃত মুসলমান সে ব্যক্তি, যার মুখ ও হাতের অনিষ্ট থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে। (বুখারি, হাদিস : ১০; মুসলিম, হাদিস : ১৭১)