কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

ইসলামী শরিয়তে যেসব কারণে রোজার কাফফারা দিতে হয়

রোজার কাজা হলো ভেঙে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা রোজার প্রতিবিধান হিসেবে শুধু রোজা আদায় করা। এক রোজার বিপরীতে এক রোজা রাখা। অতিরিক্ত কিছু আদায় না করা। অন্যদিকে রোজার কাফফারা হলো প্রতিবিধান হিসেবে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা। 

যেসব কারণে রোজার কাফফারা ওয়াজিব হয়, তা হলো—

১. ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সম্ভোগ/নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া।

২. ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো জিনিস খাওয়া বা পান করা, যা সাধারণত খাওয়া বা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। (আলমগিরি, খণ্ড ১ পৃষ্ঠা ২০৫)

৩. যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গিবত করার পর পানাহার করে। তাহলে তার ওপর কাজা-কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব। 

(ফাতহুল কাদির খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৮০)

৪. রোজাদার যদি সমকামিতায় লিপ্ত হয়, তাহলে তার ওপর কাজা-কাফফারা দুটিই ওয়াজিব। (আল-ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২২৩)

৫. পুরুষ যদি নারীর সঙ্গে জোরজবরদস্তি করে সম্ভোগ করে, তাহলে নারীর ওপর শুধু কাজা ওয়াজিব, কাফফারা নয়। আর পুরুষের ওপর কাজা-কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব। (আল-ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২২৪)

রোজার কাফফারা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমজানে। তিনি বলেন, তুমি কি একটি গোলাম আজাদ করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বলেন, তুমি কি ক্রমাগত দুই মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বলেন, তুমি কি ৬০ জন মিসকিন খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী (সা.)-এর কাছে এক আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এলো। নবী (সা.) বলেন, এগুলো তোমার তরফ থেকে লোকদের আহার করাও। 

লোকটি বলল, আমার চেয়েও অধিক অভাবগ্রস্ত কে? অথচ মদিনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চেয়ে বেশি অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। নবী (সা.) বলেন, তা হলে তুমি স্বীয় পরিবারকেই খাওয়াও। (বুখারি, হাদিস : ১৯৩৭)

ইসলামী শরিয়তে রোজা ভঙ্গ করার প্রতিবিধান রাখলেও তার শত ভাগ ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি (শরিয়ত অনুমোদিত) কোনো কারণ ছাড়া বা রোগ ছাড়া রমজান মাসের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তার পুরো জীবনের রোজা দিয়েও এর ক্ষতিপূরণ হবে না। যদিও সে জীবনভর রোজা রাখে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৭২৩)

রোজার কাফফারা হলো রোজা ভঙ্গকারী দাস মুক্ত করতে অক্ষম হলে দুই মাস লাগাতার রোজা রাখবে। আর দুই মাস রোজা রাখতে ব্যর্থ হলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়াবে অথবা ৬০ জন মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম, আটা, চাল ইত্যাদি অথবা সমপরিমাণ নগদ টাকা দেবে। একজন মিসকিনকে ৬০ দিন দুই বেলা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। (আলমগিরি ১/৩০৫, রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯০)