যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

রমজানে রোজা রাখা যাদের জন্য বাধ্যতামূলক

মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। কিন্তু মুসলিম হলেই কি রমজানের রোজা রাখা বাধ্যতামূলক? নাকি এরমধ্যেও বিধি নিষেধ আছে? ইসলামি শরিয়তে রমজানের রোজা রাখার ব্যাপারে নির্দেশনাই বা কী?রমজানের রোজা ফরজ ইবাদত ও আল্লাহর নির্দেশ। ঈমানদারদের জন্য রোজা রাখা যে ফরজ তা জানিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন-হ্যাঁ, সবার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, বরং রোজা পালনের জন্যও রয়েছে শর্ত। যেসব শর্ত সাপেক্ষে রোজা ফরজ তাহলো-

মুসলমান হতে হবে। অমুসলিমদের জন্য ইসলামে রোজা রাখার কোনো হুকুম নেই।

বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। মুসলিম ছেলে-মেয়ের বয়স ৭ বছর হলেই রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া। যদি তারা রোজা পালনে সক্ষম হয়। তবে আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ নামাজের সঙ্গে তুলনা করে ১০ বছর বয়সে রোজা না রাখলে দৈহিক শাস্তির কথা বলেছেন।

তবে ৭ বছর বয়স থেকে ছেলে-মেয়ে রোজা রাখলে তারা সাওয়াব পাবে। আর ভালো কাজে উৎসাহিত করার কারণে উৎসাহ দাতা বা বাবা-মাও সাওয়াব পাবেন। হাদিসে এসেছে-< মুকিম বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি সফরে বের না হয়, তবে তার জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। যদি কেউ দীর্ঘ সফরে বের হয় তবে তার জন্য রোজার বিধানকে সহজ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-

যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)

 

শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোজা রাখার সক্ষমতা থাকতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখলে জীবননাশের আশংকা থাকে তবে এ পরিস্থিতিতে রোজা বিধান সহজ। আল্লাহ বলেন, যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় তা পালন করবে। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)

নারীদের হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও নেফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ইসলামে নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবকে কে হায়েজ বলা হয়। হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। এ সময় তাদের জন্য রোজা রাখার হুকুম নেই।আর সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর নারীদের প্রথম ৪০ দিন হলো নেফাসের সময়। এ দুই সময়ে নারীদের রোজা বিধান থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে।রমজানের মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হয় তবে সে সময় থেকে রোজা রাখা ফরজ।

 

রমজান মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো ছেলে-মেয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়।রমজান সময় যদি কোনো পাগল ভালো হয়ে যায়। তবে তারা রোজা হুকুমের আওতায় এসে যাবে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে ইফতারের সময় পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।তবে ইসলাম গ্রহণকারী, বালেগ হওয়া ছেলে-মেয়ে কিংবা ভালো হওয়া পাগল ব্যক্তির আগের রোজা আদায় তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেননা আগের রোজাগুলো অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আবশ্যক ছিল না।যারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ভালো হয়ে যায় তবে ভালো থাকার সময় তাদের জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। রোজা অবস্থায় যদি কেউ পাগল হয়ে যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তাদের জন্য রোজা হুকুম বাতিল হবে না।রমজান মাসে কোনো মানুষ মারা গেলে অবশিষ্ট রোজা রাখায় তাদের জন্য কোনো হুকুম নেই। আত্মীয়দের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির রোজা রাখায়ও বাধ্যবাধকতা নেই।

 

যদি কেউ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে অজ্ঞতায় থেকে রোজা না রাখে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হবে না। রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানার পরপর তার ওপর রোজা রাখা বধ্যতামূলক।আবার কেউ যদি রমজান মাসের দিনের বেলায় না জানার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে মিলিত হয় তবে অধিকাংশ আলেমের মতে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে মুসলিম এলাকায় বসবাস করে রোজা ফরজ কিনা কিংবা সহবাস হারাম কিনা এ বিষয়ে জানা নেই বললে এ ওজর গ্রহণযোগ্য হবে নয়।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ফরজ রোজা পালনে এর হুকুম-আহকাম জেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। রমজানের ফরজ রোজা যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।