কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

ইচ্ছা করে রোজা ভাঙলে এর পরিণতি কী হবে?

তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ (রমজান) মাস পাবে সে যেন রোজা পালন করে। রমজান মাসের রোজা রাখা ফরজ। যারা অসুস্থ, মুসাফির বা শরিয়তের আলোকে সমস্যাগ্রস্ত; তাদের জন্য এমনিতেই ছাড় রয়েছে। কিন্তু সমস্যা ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে রমজানের ফরজ রোজা না রাখলে শাস্তি কী হবে?

বিনা কারণে রোজা না রাখলে কাজা ও কাফফার উভয়টি আদায় করার বিধান দিয়েছে ইসলাম। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিনা কারণে রোজা ভঙ্গকারীর জন্য শাস্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন। কেউ ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙলে ভীষণ শাস্তির মুখোমুখি হবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে (পা উপরে আর মাথা নিচের দিকে) ঝুলছে। তাদের গাল ফাড়া। আর তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এরা কারা প্রশ্নের উত্তরে) বলা হলো- এরা সেসব ব্যক্তি যারা বিনা কারণে রমজান মাসের রোজা নষ্ট করেছে। ইবনে খুযায়মাহ)

বিনা কারণে যে ব্যক্তি মাহে রমজানের মাত্র একটি রোজা না রাখে এবং পরে যদি ওই রোজার পরিবর্তে সারা বছরও রোজা রাখে, তবু সে ততটুকু সওয়াব পাবে না, যতটুকু মাহে রমজানে ওই একটি রোজা রাখার কারণে পাওয়া যেতো।হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, অমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার কাছে দুই ব্যক্তি আগমন করল। তারা আমার বাহুদ্বয় ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে এল। তারপর আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ের উপর উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারব না। তারা বলল, আমরা আপনাকে সহজ করে দেব। আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌছালাম, হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি বললাম, এ সব কিসের আওয়াজ? তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ। তারপর তারা আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল। হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোজা ভেঙে ফেলেছে।' (ইবনে খাযায়মাহ, ইবনে হিব্বান)

হাদিসের পরিভাষায় রোজা থেকে বিরত থাকা ব্যক্তি সবচেয়ে বড় হতভাগা। যে রমজান পেলো কিন্তু গোনাহ মাফ করাতে পারলো না তার জন্য রয়েছে ধ্বংস। যারা রমজানের রোজা পেয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারলো না তারা দুর্ভাগা। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি রমজানের এ পবিত্র মাসে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারলো না সে বড়ই দুর্ভাগা। ইবনে হিব্বান)

- অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি শরিয়তে উল্লেখিত কারণ ছাড়া এ (রমজান) মাসে একটি রোযাও ছেড়ে দেবে, সে যদি এর বদলা বা পরিবর্তে সারা জীবনও রোজা পালন করে, তবুও তার পাপের খেসারত হবে না। (বুখারি)

উল্লেখিত হাদিস থেকে বুঝা যায়, বিনা কারণে রোজা নষ্ট করা কত মারাত্মক অপরাধ। তাই ইচ্ছাকৃত রোজা নষ্ট না করে আল্লাহর বিধান মেনে তারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যথাযথভাবে রমজানের রোজা পালন করা একান্ত আবশ্যক।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান মাসের রোজা যথাযথভাবে আদায় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের তাওফিক দান করুন। রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।