কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

মুখেরও রোজা আছে

মানুষের যত সওয়াব বা গোনাহ হয়, এর অন্যতম মাধ্যম কথা বা জবান। জবান বা কথার কারণে মানুষ সওয়াব যেমন অর্জন করতে পারে, তেমনি গোনাহ কামাইও করতে পারে। এ কারণে কথা বা জবানের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বারবার তাগিদ এসেছে। রোজা পালনকালে কথা বা জবানের ব্যাপারে অধিকতর সর্তকতা কাম্য।

জিহ্বা দিয়ে যেসব পাপ জিহ্বা দিয়ে ১৯টি পাপ সংঘটিত হয়

১) কারও নাম খারাপ করে ডাকা বা নাম ব্যঙ্গ করা।
২) খারাপ ঠাট্টা বা বিদ্রূপ করা।
৩) অশ্লীল ও খারাপ কথা বলা।
৪) কাউকে গালি দেওয়া।
৫) কারও নিন্দা করা।
৬) অপবাদ দেওয়া।
৭) চোগলখুরি করা।
৮) বিনা প্রয়োজনে গোপনীয়তা ফাঁস করে দেওয়া।
৯) মোনাফিকি করা ও দুই মুখে (দ্বিমুখী) কথা বলা।
১০) বেহুদা ও অতিরিক্ত কথা বলা।
১১) বাতিল ও হারাম জিনিস নিয়ে আলোচনা করে আনন্দ লাভ করা।
১২) কারও গিবত করা।
১৩) খারাপ উপনামে ডাকা।
১৪) কাউকে অভিশাপ দেওয়া।
১৫) কাউকে সামনাসামনি বা সম্মুখে প্রশংসা করা।
১৬) মিথ্যা স্বপ্ন বলা।
১৭) অনর্থক চিৎকার বা চেঁচামিচি করা।
১৮) জিহ্বা দিয়ে হারাম বস্তুর স্বাদ নেওয়া, গ্রহণ করা বা খাওয়া।
১৯) জিহ্বা দিয়ে খারাপ অর্থে কাউকে কোনো ভঙ্গি করা বা দেখানো।

জবানের জন্য সদা প্রস্তুত প্রহরী

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে না কেন, তা লেখার জন্য তৎপর প্রহরী তার কাছে প্রস্তুত আছে। (সুরা কফ : ১৮)। অর্থাৎ মানুষ যখন যা বলে, চাই তা ভালো হোক বা মন্দ, তা লেখার জন্য সদা প্রস্তুত প্রহরী নিযুক্ত রয়েছে। তাই কথা বলার ক্ষেত্রে আমাদের অত্যধিক সতর্কতা কাম্য।

রমজান ও কথা রমজান মাসে কৃচ্ছ্বতার সময়ও কারও কারও মধ্যে কথাবার্তায় বেপরোয়া ভাব দেখা যায়। অকাতরে মিথ্যা, গিবত, চোগলখোরি, বেহুদা বকবকানি, গালি-গালাজ, অশ্লীলতা, অভিসম্পাত, ঠাট্টা-বিদ্রুপ, উস্কানি, হিংসা-বিদ্বেষ প্রচার, কুৎসা, পরচর্চা ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য মানুষের এবং নিজের বিপদ সৃষ্টি এবং আশপাশের পরিবেশ বিনষ্ট করতে অনেকেই তৎপর হয়। সারা বছরের বদঅভ্যাসের দাস হয়ে রমজানের পবিত্র পরিবেশকেও বিনষ্টে কেউ কেউ তৎপর হয়। অথচ তাদের রোজা কতটুকু কাজে আসবে, সে ব্যাপারে তারা মোটেও ভাবনা-চিন্তা করে না।এসব অপকর্মের মাধ্যমে রোজা নষ্টের পাশাপাশি অন্য রোজাদারকে কষ্ট দিয়ে অধিক গোনাহের ভাগীদার হয় সেসব দুর্ভাগা লোক। ফলে রোজার সময় শারীরিক সংযমের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অঙ্গ তথা জবানের নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরি। মাহে রমজানের জবান বা কথার অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা বিশেষভাবে অপরিহার্য্য।