যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

রমযান মাসের সমাপ্তি

অতি শীঘ্রই রমযান মাস আমাদের নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছে ও নতুন একটি মাস আসছে, কিন্তু রমযান মাস আমাদের জন্য সাক্ষী থাকবে। এ মাসে যে ব্যক্তি ভাল আমল করতে পেরেছে, সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে ও শুভ পরিণামের অপেক্ষায় থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ভাল আমলকারীর আমল নষ্ট করেন না। আর যে ব্যক্তি এ মাসে অন্যায় কাজ করেছে, সে যেন তার প্রভূর কাছে খালেছ তওবা করে। আল্লাহ তাআলা তওবাকারীর তওবা কবুল করেন। তিনি আমাদের জন্য এ পোশাক শেষে এমন কিছু ইবাদত নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন হয়, বৃদ্ধি পায় ঈমানী শক্তি, সমৃদ্ধ হয় আমলনামা। যেমন সদকাতুল ফিতর আদায় করা এবং ঈদের চাঁদ উঠার পর থেকে ঈদের সালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুন আল্লাহর তাআলার মহত্ব বর্ণনা কর (তাকবীর বল)। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পার। {সূরা আল-বাকারা : ১৮৫}
তার পদ্ধতি হল, অধিক হারে নিম্নের এ তাকবীর পড়া :
পুরুষগণ ঘরে, বাজারে এবং মসজিদে অর্থাৎ সকল জায়গায় আল্লাহর মহত্বের ঘোষণা দিয়ে ইবাদতের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। উক্ত তাকবীর উচ্চস্বরে বলা সুন্নত। মহিলাদের জন্য নিচু স্বরে বলা সুন্নত। যেহেতু তারা নিজেদের ও নিজেদের কণ্ঠস্বরকে গোপন করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। মুসলমানদের ঈদের দিনটি কত চমৎকার! পূর্ণ একমাস সিয়াম সাধনা শেষে তারা সর্বত্র তাকবীর ধ্বনি দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ করে এবং তারা আল্লাহর তাকবীর, প্রশংসা ও একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তোলে। তারা আল্লাহর রহমতের আশাবাদী এবং তার আজাবের ভয়ে শংকিত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা আলা ঈদের দিন বান্দাকে ঈদের সালাতের হুকুম দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে তার উম্মতের নারী-পুরুষ সকলকে আদেশ করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ আল্লাহর হুকুমের মতই।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর। তোমাদের আমলসমূহকে নষ্ট কর না। {মুহাম্মদ : ৩৩}
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহে যেতে বলেছেন। যদিও তাদের জন্য ঈদের সালাত ব্যতীত অন্যান্য সালাত ঘরে পড়াই উত্তম।
উম্মে আতিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতে সালাতের উদ্দেশ্যে বের হতে বলেছেন। এমনকি ঋতুবতী নারীকেও। ঋতুবতী নারীগণ সালাতে অংশগ্রহণ করবে না। ঈদগাহের এক পাশে থাকবে এবং দুআয় শরিক হবে। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের প্রত্যেকের পর্দা করার চাদর নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, সে তার বোনের চাদর নিয়ে হলেও ঈদের সালাতে শরিক হবে।
ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুর খাওয়া সুন্নত।
তিন, পাঁচ বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায় হিসাব করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর খেতেন। [বুখারী ও আহমদ]
ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। আলী বিন আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
অর্থাৎ ঈদগাহে পায় হেঁটে যাওয়া সুন্নত। [তিরমিযী]
পুরুষগণ ঈদগাহে যাওয়ার সময় সুন্দর পোশাক পরে সজ্জিত হয়ে যাবে।
বুখারীতের আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি রেশমী পোশাক বাজার থেকে এনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটা ক্রয় করে ঈদের দিন এবং মেহমানের উপস্থিতিতে ব্যবহার করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশমী কাপড়ের দরুন অসুন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, রেশমী পোশাক ঐ ব্যক্তিদের জন্য যারা আখেরাতের কিছুই পাবে না। পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক বা স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহার করা বৈধ নয়। যেহেতু এটা উম্মতে মুহাম্মদীর পুরুষদের জন্য হারাম। নারীগণ সাজসজ্জা ও আতর ব্যবহার ব্যতীত এবং পূর্ণ পর্দাসহ ঈদগাহে যাবে। কারণ তাদেরকে বাইরে বের হওয়ার সময় উলঙ্গপনা, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং সুঘ্রাণ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। গোপনীয়তা ও পর্দার আদেশ করা হয়েছে। ঈদের সালাত একাগ্র চিত্তে আল্লাহর ভয়-ভীতি সহকারে আদায় করবে। বেশী বেশী করে আল্লাহর জিকির করবে ও দোয়া পড়বে। তার রহমতের আশা ও আজাবের ভয় করবে। সকলে একত্রিত হয়ে আল্লাহকে ডাকার মধ্যে অধিক মর্যাদা আছে। যেহেতু মানুষের মধ্যে কেউ অধিক পুণ্যবান, কেউ আল্লাহ ভীরু, আবার কেউ মধ্যম স্তরের। বিধায় সকলে একত্রিত হয়ে দোয়া ও কান্নাকাটি করা অধিক লাভজনক ও আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
হে নবী, আপনি লক্ষ্য করুন, আমি তাদের কতককে কতকের ওপর সম্মান দান করেছি। আর যে পরকালে মর্যাদা লাভ করে সে প্রকৃত মর্যাদা লাভকারী। {সূরা বানী ইসরাঈল : ২১}
পোশাক আগনে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করবে। কেননা তিনি বান্দার জন্য সালাত, সিয়াম, কুরআন তেলাওয়াত, সদকা ইত্যাদি ইবাদত সহজ করে দিয়েছেন। ইবাদত করার তাওফীক পাওয়া সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
হে নবী! আপনি বলুন, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা প্রাপ্ত হয়েছে, তাদরে এতে খুশি হওয়া উচিৎ। মানুষ যে সম্পদ অর্জন করে, এটা তা থেকে অধিক উত্তম। {ইঊনুস : ৫৮}
যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় রমযানের সিয়াম ও রাত জাগরণ গুনাহ মাফের উপায়। সুতরাং মুমিনগণ রমযান মাস ফেলে খুশ হয়। আর দূর্বল ঈমানদার রমযান মাস ফেলে নারাজ হয় ও সে সিয়াম পালনকে কষ্টকর মনে করে।

হে আমার ভাই সকল! রমযান মাস শেষ হয়ে গেল। কিন্তু মুমিনের আমল তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেষ হবে না।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
আপনি আপনার প্রভূর ইবাদত করুন, আপনার মৃত্যু আসা পর্যন্ত। {আল-হিজর : ৯৯}
তিনি আরো ইরশাদ করেন :
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথ ভয় কর। তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। {আলে-ইমরান : ১০৬}
রাসূলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে,তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। এ