কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

আমরা কিভাবে কুরআন বুঝব?

আল-কুরআনুল কারীম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ঠ ও চিরন্তন মু‘জিযা, বিশ্ব মানবতার মুক্তিসনদ। এতে রয়েছে মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট হিদায়াত ও দিক-নির্দেশনা, রয়েছে আলোকবর্তিকা, উপদেশ, রহমত ও অন্তরের যাবতীয় ব্যাধির উপশম। আল্লাহ সুবহানাহু বলেন,
﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدىً وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ (57) قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ﴾
‘‘হে মানুষ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং অন্তরসমূহে যা থাকে তার শিফা, আর মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও রহমাত। বল, ‘আল্লাহর অনুগ্রহে ও রহমাতে’। সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশী হয়। এটি যা তারা জমা করে তার চেয়ে উত্তম।’’


তিনি আরো বলেন,
﴿وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ إِلَّا لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي اخْتَلَفُوا فِيهِ وَهُدىً وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ﴾
 ‘‘আর আমি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছি, শুধু এজন্য যে, যে বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে, তাদের জন্য তা তুমি স্পষ্ট করে দেবে এবং এটি হিদায়াত ও রহমাত সে কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।’’

কিয়ামাত পর্যন্ত আল-কুরআন হিফাযতের দায়িত্ব আল্লাহ তাআলা নিজেই নিয়েছেন। আল-কুরআন সংরক্ষণের বিষয়টি মূলতঃ আল্লাহর মহান কুদরতের বিশাল নিদর্শন। যে প্রজন্মের মধ্যে কুরআন সরাসরি নাযিল হয়েছে তাদের জন্য এ গ্রন্থ যেমন উপযোগী ও চির আধুনিক ছিল, তাদের পরবর্তী আগত অনাগত সকল প্রজন্মের জন্যও তা চিরন্তন ও শাশ্বত জীবনাদর্শ। অতএব সন্দেহ নেই যে, আল-কুরআনের শেখন ও শিক্ষাদান, নিয়মিত অধ্যয়নের মাধ্যমে একে সঠিকভাবে বুঝা, উপলব্ধি করা ও যথাযথ গুরুত্বের সাথে সে অনুযায়ী আমল করা সে সব লোকদেরই অনুসৃত নীতি যারা সর্বযুগেই ছিলেন সৎ ও পূণ্যবান। বরং এ হচ্ছে সে ঠিকানা যেখানে দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় কল্যাণ ও সফলতা নিহিত।

সবযুগেই মুসলিম জনসাধারণ কুরআনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। মহান আল্লাহ ততদিন পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহকে সর্বোত্তম ও শ্রেষ্ঠ জাতির স্বীকৃতি দেবেন যতদিন তারা এ গ্রন্থটি অধ্যয়ন করবে, হিফয করবে, হিফাযত করবে, এর অর্থ নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবে, এর গূঢ় তত্ত্বব উপলদ্ধি করবে, এর নির্দেশ মেনে চলবে এবং এর নিষেধকৃত সকল কিছু পরিহার করবে। ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল জাতির জীবনে এ গ্রন্থের প্রয়োজনীয়তা যেহেতু অপরিসীম, সেহেতু মুসলমানগণ এ গ্রন্থের প্রতি সর্বাধিক যত্ন ও গুরুত্ব দিয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোন জাতির গ্রন্থ এ রকম গুরুত্ব পাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেনি। কুরআন কারীমের এ অপরিসীম গুরুত্বের কারণে সারা বিশ্বের মুসলিম মানসে কুরআনের পঠন-পাঠন, অধ্যয়ন ও কুরআন বুঝার এক অভূতপূর্ব সাড়া ও বিপুল উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, যেন কুরআন কারীমের এ বিশাল চর্চা থেকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিষ্ঠাবান মুসলিম মাত্রই উপকৃত হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় -কিভাবে আমরা কুরআনের সঠিক বুঝ ও উপলব্ধি অর্জন করব? এ প্রবন্ধে আমরা সে প্রশ্নটির সঠিক উত্তর পাওয়ারই চেষ্টা করব এবং পাশাপাশি এমন কিছু বিষয় উপস্থাপন করব যা পাঠকের মন ও মানস থেকে অবোধগম্যতার সকল দেয়াল তুলে দেবে এবং কুরআনকে সঠিকভাবে বুঝে নিতে সহায়তা করবে।