যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায়

মহান আল্লাহ তায়ালার নৈপুণ্য সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম সেরা সৃষ্টি হলো মানবজাতি। মানুষের জন্য জগতের সবকিছু সৃজন করেছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। মানুষের জন্য কল্যাণময় করে দিয়েছেন সব সৃষ্টিকে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, তিনিই জমিনে যা আছে, সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। (সুরা-বাকারাহ :২৯) মুমিনগণ আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণে সব সময় শুকরিয়া আদায় করে থাকেন। জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে আমাদের বেষ্টন করে রেখেছে মহান রবের অফুরন্ত নিয়ামত। কিন্তু খুব কম লোকই সেই নিয়ামতগুলো উপলব্ধি করে এবং শুকরিয়া আদায় করে।

মনে রাখবেন, আল্লাহর নিয়ামত বুঝতে পারাও আল্লাহর বিশেষ রহমত। আল্লাহর নিয়ামতের মধ্যে সুস্থতা হলো একটি বড় নিয়ামত। এর যথাযথ ব্যবহার জরুরি। ঘরে পিতা-মাতা জীবিত থাকাও বড় নিয়ামত। কারণ, তাদের সেবাতেই মিলবে পরকালীন সুখ। স্বামী-স্ত্রী হলো পরস্পর পরস্পরের জন্য স্পেশাল নিয়ামত। আর দম্পতির কাছে সন্তান হলো উপহার, যা মহান রবের বিশেষ অনুগ্রহ। অনেকে হতাশায় পড়ে যান এবং আফসোস করেন যে, আমার কিছুই নেই। অথচ কী নেই, সে নিয়ামত বুঝতে হলে নিজের নিম্নতম ব্যক্তির দিকে তাকালে উপলব্ধি করা সম্ভব। অনেক মানুষকে দেখা যায়, যারা নামাজে সিজদাহ দিতে অক্ষম। অথচ আপনি সিজদাহ করতে পারছেন। এর মানে আপনি আল্লাহর নিয়ামতে ডুবে আছেন। আপনি তিন বেলা খেতে পারছেন, তা-ও আপনার জন্য নিয়ামত। কারণ, অনেকের তিন বেলাও জোটে না। আপনি পথ চলে কষ্ট করে দেহের ঘাম ঝরিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন, সেটাও নিয়ামত। কারণ, অনেকেই বিছানায় রোগে কাতরাচ্ছে। আপনি সুন্দর করে কথা বলতে পারছেন এবং আল্লাহর নৈপুণ্যে ঘেরা সব সৃষ্টি দেখতে পাচ্ছেন মানে শুকরিয়া আদায় করুন। কারণ, অনেকেই বোবা ও অন্ধ আছে।

স্মরণ রাখা ভালো, বিলাসবহুল জীবনযাপনে নিয়ামতে ভরপুর নয়; বরং শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন সেটাই বড় নিয়ামত। যদি নিয়ামতের গণনা করতে যান, তাহলে এর কোনো শেষ নেই। যদি প্রশংসা করতে চান, তাহলে শেষ করতে পারবেন না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা করো, তবে তার সংখ্যা নিরূপণ করতে পারবে না। (সুরা-ইবরাহিম :৩৪) তিনি আরো বলেন, আর জমিনে যত গাছ আছে, তা যদি কলম হয়, আর সমুদ্র হয় কালি, তার সঙ্গে কালিতে পরিণত হয় আরো সাত সমুদ্র, তবু আল্লাহর বাণীসমূহ শেষ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা লোকমান :২৭)

আল্লাহর নেয়ামত এতই বেশি যে, যার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা আর রহমানে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, সুতরাং, তোমাদের রবের কোন নিয়ামতকে তোমরা অস্বীকার করবে? একজন মুমিন কখনো রবের নিয়ামতের ক্ষেত্রে গাফেল হয় না এবং শুকরিয়া আদায়ে বিলম্ব করে না। প্রকৃত মুমিনগণ আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়ায় সিজদাবনত হন।