ঘুমিয়ে থাকা, ভুলে যাওয়া বা কোনো অসুবিধার কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে না পারলে ওই নামাজ পরবর্তীতে আদায় করাকে কাজা নামাজ বলা হয়। ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা আদায় করা আবশ্যক। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ فِي الْيَقَظَةِ. فَإِذَا نَسِيَ أَحَدُكُمْ صَلَاةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ: وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لذكري ঘুমিয়ে থাকার কারণে নামাজ আদায় করতে না পারলে তা অন্যায় নয়। অন্যায় হলো জেগে থেকেও নামাজ আদায় না করা। তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করতে ভুলে গেলে অথবা নামাজের সময় ঘুমিয়ে থাকলে, যে সময়েই নামাজের কথা স্মরণ হবে, নামাজ আদায় করে নেবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমার স্মরণে নামাজ আদায় কর। (সুরা ত্বহা: ১৪)। (সহিহ মুসলিম: ৬৮১)
কাজা আদায়ের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। কাজা নামাজ যে কোনো সময় আদায় করা যায়। দিনের নামাজ অর্থাৎ জোহর ও আসর কোনো কারণে ছুটে গেলে কাজা হিসেবে রাতে আদায় করা যাবে।কোনো নামাজ কাজা হলে পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজ আদায়ের আগেই তা কাজা করে নিতে হবে। কোন ব্যক্তির যদি ৬ ওয়াক্ত নামাজের কম কাজা হয়, তাহলে ওই ব্যক্তিকে ফিকহের পরিভাষায় সাহেবে তারতিব বলা হয়। তার ওপর নামাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। অর্থাৎ আগে কাজা নামাজ আদায় করতে হবে তারপর ওয়াক্তিয়া আদায় করবে এবং কাজার ক্ষেত্রেও ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। পূর্ববর্তী ওয়াক্তের কাজা নামাজ আদায় করার আগেই যদি পরবর্তী নামাজের সময় হয়ে যায় তাহলে প্রথমে কাজা আদায় করা আবশ্যক। তারপর ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করবে।
আর কারো যদি ৬ ওয়াক্ত থেকে বেশি নামাজ কাজা হয়, তার জন্য তারতিব বা সিরিয়াল রক্ষা করা জরুরি নয়। সে কাজা আদায় না করেই নতুন আসা ওয়াক্তের নামাজ পড়তে পারবে। তবে যত দ্রুত সম্ভব কাজা হয়ে যাওয়া সব নামাজ আদায় করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।নামাজ কাজা হওয়ার দিন-তারিখ মনে না থাকলে এভাবে নিয়ত করবে যে আমার জিম্মায় কাজা হিসেবে থাকা সর্বশেষ জোহরের নামাজের কাজা আদায় করছি। এভাবে প্রত্যেক ওয়াক্তের কাজা নামাজ আদায় করার সময় নিয়ত করতে হবে। যতদিন তার মন এ সাক্ষ্য না দেবে যে তার জিম্মায় আর কোনো কাজা নামাজ বাকি নেই, ততদিন পর্যন্ত কাজা নামাজ আদায় করতে থাকবে।