বিতর নামাজ। ইশার পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত সময়ে পড়তে হয়। এটি রাতের নামাজ। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজ নামাজের বাইরে সফর কিংবা মুসাফির সর্বাবস্থায় দুইটি নামাজ কখনো ছাড়তেন না। তার একটি হলো রাতের বিতর নামাজ এবং ফজরের সুন্নাত নামাজ। বিতর নামাজ সম্পর্কে নবিজী কী বলেছেন?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর নামাজ সম্পর্কে বলেছেন-
الوتر ليس بحَتْم كصلاتكم المكتوبة، ولكن سنةٌ سنها رسول الله صلى الله عليه وسلم বিতরের নামাজ ফরজ নামাজের মত জরুরি নামাজ নয়। বরং এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত নামাজ। (তিরমিজি, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম, নাসাঈ, মুসনাদে আহামদ, আ-তারগিব) বিতর নামাজ ফরজের মতো আবশ্যক নয়; বরং তা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাগিদ দেওয়া সুন্নাত। হাদিসের অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামানে প্রেরণ করেন; তখন তাকে উপদেশ দিয়ে নবিজী বলেছিলেন, তুমি তাদের জানাবে যে, আল্লাহ তাদের ওপর দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ (আবশ্যক) করেছেন।(বুখারি ও মুসলিম)
বিতর নামাজের ফজিলত
বিতর নামাজ পড়া ফরজের মতো আবশ্যক না হলেও বিতর ফজিলতপূর্ণ একটি নামাজ। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত-
হজরত খারেজা ইবনে হুজাফাতুল আদাভি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন-
إن الله تعالى قد أمدكم بصلاة وهي خير لكم من حُمرِ النَّعم، وهي الوِتر، وجعلها لكم فيما بين العشاء إلى طلوع الفجر মহা মহীয়ান আল্লাহ তোমাদেরকে একটি অতিরিক্ত নামাজ দিয়েছেন সেটা তোমাদের জন্য লাল উটের চেয়েও উত্তম। তা হলো বিতর। তোমাদের জন্য এ নামাজ আদায়ের সময় হচ্ছে ইশার সালাতের পর থেকে ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত। (আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসতাদরাকে হাকেম)
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, বিতরের নামাজ তোমাদের ফরজ নামাজসমূহের মতো অত্যাবশ্যকীয় (ফরজ) নামাজ নয়। বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (এ নামাজ) তোমাদের জন্য সুন্নাতরূপে প্রবর্তন করেছেন। তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-
يا أهل القرآن أوتروا فإن الله تعالى وتر يحب الوتر হে আহলে কুরআন! তোমরা বিতর পড়ো; কারণ আল্লাহ তাআলা বিতর (বেজোড়)তিনি বিতর পছন্দ করেন। (তিরমিজি,ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
সুতরাং ইশার পর থেকে ফজরের সময় হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে বিতর নামাজ পড়া উত্তম। কেননা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় বিতর নামাজ পড়তেন। বিতর নামাজ (ফরজ-ওয়াজিব-সুন্নাতে মুয়াক্কাদা) নিয়ে কোনো বিতর্ক নয়। বরং প্রিয় নবির আমল হিসেবে সবারই বিতর নামাজ পড়া উচিত।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাতের অনুসরণে বিতর নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।