নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে সালাত আদায় করেছেন ঠিক সেভাবে সালাত করাই সালাতের বিশুদ্ধ পদ্ধতি। মালেক ইব্ন হুয়াইরিস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখ, সেভাবে সালাত আদায় কর”। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ন্যায় যে সালাত আদায় করতে চায়, তার উচিত এ পুস্তকে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে সালাত আদায় করা:
১. পরিপূর্ণরূপে অযু করা, যেরূপ আল্লাহ তা‘আলা তার বাণীতে নির্দেশ দিয়েছেন:
“হে মুমিগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাকনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও। আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত দ্বারা মাসেহ কর। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নিআমত তোমাদের উপর পূর্ণ করতে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর”।
আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কুবল করা হয় না, এবং খিয়ানতের সদকাও কবুল করা হয় না”। অতএব, সালাত আরম্ভ করার পূর্বে প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য জরুরি পরিপূর্ণরূপে পবিত্রতা অর্জন করা।
২. কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানো, অর্থাৎ মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন”।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ভুল নিয়মে সালাত আদায়কারীর ঘটনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“যখন তুমি সালাতের জন্য দণ্ডায়মান হও, পরিপূর্ণরূপে অযু কর অতঃপর কিবলা মুখী হও...”
৩. সালাত আদায়কারী ইমাম বা মুনফারেদ যেই হোক, সামনে সুতরা রেখে দাঁড়াবে। সুবরা ইব্ন মা‘বাদ জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তীর বা বর্শা দিয়ে হলেও তোমাদের প্রত্যেকে যেন সালাতে সুতরা কায়েম করে”। আবু জর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায়ের জন্য দণ্ডায়মান হয়, তখন তার সামনে উটের উপর আরোহী ব্যক্তির হেলান দেয়ার জন্য পিছনে রাখা ঠিকার ন্যায় কোন কিছু সুতরা হিসেবে রাখাই যথেষ্ট, কারণ যদি অনুরূপ ঠিকা না থাকে, তাহলে তার সালাত গাধা, নারী ও কালো কুকুর ভঙ্গ করে দিতে পারে”। সুতরার কাছাকাছি দাঁড়াবে ও তার নিকটবর্তী হয়ে সালাত আদায় করবে। আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করে, সে যেন ফিরে সালাত আদায় করে ও তার নিকটবর্তী হয়”। সুতরা ও তার মাঝখানে একটি বকরি অতিক্রম করার জায়গা ফাঁকা রাখবে, অথবা সেজদার জায়গা পরিমাণ খালি রাখবে। তিন হাতের অতিরিক্ত ফাঁকা রাখবে না। অনুরূপ দুই কাতারের মাঝেও এর বেশী ফাঁকা রাখবে না। সাহাল ইব্ন সা‘দ সায়েদি বর্ণনা করেন: