রাসুলুল্লাহ (সা)-এর পবিত্র দেহ সৌন্দর্যের আকর ছিল। তা ছিল নরম, কমনীয়, সবল, সুঠাম ও মধ্যম আকৃতির। তিনি অতি দীর্ঘ বা খর্ব আকৃতির ছিলেন না, বরং মানানসই লম্বা ছিলেন। তিনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। তাঁর শরীরের কোনো অংশ ফুলে বের হয়ে ছিল না; যেমন বার্ধকের কারণে মানুষের পিঠ কুঁজো হয়ে যায়।
আলী (রা.) বলেন, তিনি মধ্যম আকৃতির চেয়ে একটু লম্বা ছিলেন। আলী ও আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে গমন করতেন, তখন সবার চেয়ে তাঁকে সামান্য লম্বা মনে হতো এবং অন্যদেরকে তাঁর চেয়ে বেঁটে দেখাত। আবার একাকী হলে তাঁকে মধ্যম আকৃতিরই মনে হতো। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দেহ মোবারকের কোনো ছায়া ছিল না। সূর্যের কিরণ বা চাঁদের আলোতে তাঁর পবিত্র শরীর থেকে কোনো ছায়া তৈরি হতো না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দেহ মোবারকের কেন ছায়া ছিল না তার একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সবচেয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা হলো, নবীজি (সা.) স্বয়ং আলোর প্রতিভূ ছিলেন। বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, তাঁর পবিত্র শরীর থেকে আলো নিঃসরিত হতো। আর আলোর উৎস থেকে কেবল আলোই সৃষ্টি হতে পারে, কোনো ছায়া তৈরি হতে পারে না। এ জন্য মহানবী (সা.)-এর একটি গুণবাচক নাম ছিল নুর বা জ্যোতি। পারস্যের বিখ্যাত কবি আল্লামা জামি (রহ.) বলেন, উম্মি নবী জগতের সূক্ষ্ম জ্ঞানগুলোর অধিকারী। তিনি ছায়াহীন কিন্তু সমগ্র জগতের ছায়া দানকারী। মহানবী (সা.)-এর দৈহিক ও আত্মিক নুরের প্রতিফলন ছিল তাঁর দেহ মোবারকের রঙেও। তিনি উজ্জ্বল ও নুরবিশিষ্ট রঙের অধিকারী ছিলেন, সাহাবায়ে কিরাম (রা.) যাকে আবয়াজু মুলিহান বা লাবণ্যময় শুভ্র বলেছেন। অর্থাৎ তিনি মাধুর্যহীন ফ্যাকাসে সাদা ছিলেন না, বরং তিনি মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন।